সিম রেজিস্ট্রেশন দেখার নিয়ম। সিম যেভাবে বন্ধ করবেন

SIM এর পূর্ণরূপ হলো সাবস্ক্রাইবার আইডেন্টিটি মডিউল। আমার যারা মোবাইল ফোন ব্যবহার করি তাদের ফোনে কমপক্ষে ১ টি করে সিম আছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৪ টি অপারেটর এই সেবা দিচ্ছে। ২০২১ সালের জানুয়রি পর্যন্ত এই ৪ টি অপারেটরের অধীনে প্রায় ১৭১.৮৫৪ মিলিয়ন সিম রেজিট্রেশন হয়েছে। এক সময় যে কোন অপারেটরের সিম নিতে তেমন কোন ডকুমেন্ট লাগতো না। কিন্তু বর্তমানে কোন সিম নেয়ার জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর মাধ্যমে NID কার্ড যাচাই করা হয় এবং এর পর সিমটি একটিভ হয়। তবে একজন গ্রাহক তার ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১৫ টি পর্যন্ত সিম কার্ড রেজিট্রেশন করতে পারবে।

সিম রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

প্রতিটি অপারেটর এর সিম বিক্রির জন্য বিক্রয়/রেজিট্রেশন কেন্দ্র আছে এবং এগুলো যতেষ্ট পরিমানে হওয়ায় সহজেই হাতের নাগালে পাওয়া যায়। এছাড়া আপনি যে অপারেটরের সিম নিতে চাচ্ছেন সেই অপারেটরের কাস্টোমার সাপোর্ট সেন্টারেও সিম পাওয়া যায়। সিম কার্ড রেজিট্রেশন সেবা দানকারীর কাছে ফিংঙ্গার স্ক্যানার সহ ডিভাইস থাকে যেটার মাধ্যমে সিম কার্ড রেজিট্রেশন করা হয়। সিম কার্ড রেজিট্রেশনের জন্য NID কার্ড এর নাম্বার এবং যার NID কার্ড তাদে স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে হয় ফিঙ্গার প্রিন্ট ভেরিফাই করার জন্য। রেজিট্রেশন সেবা দানকারীর কাছে থাকা সিমগুলোর মধ্যে থেকে আপনি আপনার পছন্দ মতো সিম বাছাই করে নিতে পারবেন। এছাড়া আপনি যদি কাস্টমার কেয়ার থেকে সিম রেজিট্রেশন করে তাহলে সিম নাম্বার ফাকা থাকা সাপেক্ষে আপনি আপনার পছন্দ মতো নাম্বার দিয়ে সিম কার্ড রেজিট্রেশন করতে পারবেন। সিম নাম্বার বাছাই করার পর সেটা সেবা দানকারীকে জানাতে হবে। এরপর সেবাকারী তার ডিভাইস এ আপনার ২ হাতের মোট ৪ আঙ্গুলে ছাপের মাধ্যমে আপনার পরিচয় নিশ্চিত করবে এবং সাথে সাথেই আপনার সিমটি একটিভ হয়ে যাবে।
আঙ্গুলের ছাপ দেয়ার পর অপারেটর ভেদে সিমটি একটিভ হতে কিছু সময় লাগতে পারে। যদি বেশি সময় লাগে তাহলে সেবা দানকারী আপনাকে জানাবে এবং একটিভ হতে কত সময় লাগতে পারে সেটিও তিনিই বলে দিবেন।

সিম স্থায়ীভাবে বন্ধ করার নিয়ম

আমাদের দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ১ জনের নামে ১৫ টির বেশি সিম নিবন্ধন থাকতে পারবে। যদি কোন করনে ১৫ টির বেশি সিম নিবন্ধন থাকে তাহলে যে সিমগুলো ব্যবহার করা হয় না বা অপ্রয়োজনীয় সেগুলো বন্ধ করে দেয়াই ভালো। আপনি আপনার অব্যবহৃত বা অপ্রয়োজনীয় সিমকার্ড  টি ২ ভাবে

  • হেল্পলাইন এ কল করে
  • সরাসরি কাস্টমার সেন্টারে গিয়ে

হেল্পলাইন এ কল করে

হেল্পলাইনে কল করে সিম বন্ধ করতে হলে আপনার সিমটি আপনার কাছেই থাকতে হবে এবং সিমটি একটিভ থাকতে হবে। আপনি যে নাম্বার বন্ধ করতে চাচ্ছেন সেই নাম্বার থেকে ওই অপারেটর এর হেল্পলাইন এ ফোন করতে হবে এবং আপনি যে সিমটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে চাচ্ছেন সেটা জানাতে হবে। এরপর তারা আপনার থেকে বেশ কিছু তথ্য জানতে চাইবে। যেমনঃ যে NID কার্ড দিয়ে আপনি সিম রেজিট্রেশন করেছেন সেটির লাস্ট কয়েকটি ডিজিট, জন্ম তারিখ, লাস্ট কল, বন্ধ করার কারন ইত্যাদি। এরপর তাদের কাছে সসকল তথ্য সত্য মনে হলে এবং সন্দেহ জনক কিছু মনে না হলে আপনার সিমটি বন্ধ করে দিবে

সরাসরি কাস্টমার সেন্টারে গিয়ে

সরাসারি কাস্টমার সেন্টারে গিয়েও আপনি সিম বন্ধ করতে পারবেন। কাস্টমার সেন্টারে থাকা সেবা দানকারী প্রতিনিধিকে জানালে সে আপনার NID কার্ড দিয়ে নিবন্ধন করা ওই অপারেটরের সকল সিমের একটা লিস্ট আপনোকে দিবেন। এর মধ্য থেকে কোন সিমগুলো আপনি স্বচল রাখতে চাচ্ছেন আর কোনগুলো বন্ধ করতে চাচ্ছেন সেগুলো জানতে চাইবে। আপনি প্রতিনিধিকে সেগুলো জানালে আপনার সিগুলো বন্ধ করে দিবে।

ক্রেডিট কার্ড কি? যেভাবে ক্রেডিট কার্ড পাবেন

সিম রেজিস্ট্রেশন দেখার নিয়ম

সিম আপনি যে ভাবেই বন্ধ করেন না কেনো বন্ধ করার আগে অবশ্যই আপনাকে জনতে হবে আপনার কোন কোন সিম আপনার NID কার্ড ব্যবহার করে রেজিট্রেশন করা। তাই চলুন দেখে নিই সিম রেজিস্ট্রেশন দেখার নিয়ম গুলোঃ

  • *16001# ডায়েল করে
  • কাস্টমার সেন্টার গিয়ে

*16001# ডায়েল করে

*16001# ডায়েল করে আপনি সহজেই আপনার NID কার্ডের অধীনে থাকা সকল সীম নাম্বার বের করতে পারবেন। এজন্য প্রথমে আপনারকে আপনার সিম থেকে *16001# এ ডায়েল করতে হবে। এরপর আপনার NID কার্ড নাম্বারের শেষের ৪ ডিজিট লিখে সেন্ড করতে হবে।
ফিরতি ম্যাসেজে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে আপনার NID এর অধীনে কতগুলো সিম রেজিট্রেশন করা আছে এবং সেগুলো কোন কোন অপারেটরের। পাশাপাশি প্রতিটা নাম্বারের প্রথম ৩ ডিজিট এবং শেষর ৩ ডিজিটও জানিয়ে দেয়া হবে।

কাস্টমার সেন্টার গিয়ে

কাস্টমার সেন্টারে গিয়েও আপনি চেক করতে পারবেন আপনার NID দিয়ে মোট কতগুলো সিম একটিভ আছে। তবে এখানে সমস্যা হলো আপনি যে অপারেটরের কাস্টমার সাপোর্ট সেন্টারে যাবেন আপনি শুধু সেই অপারেটরের সিম এর তথ্য জানতে পারবেন। কাস্টমারে সেন্টারে যাবার পর আপনি সাপোর্ট এজেন্ট/ সেবাদানকারীকে বলবেন যে আপনার NID দিয়ে একটিভ থাকা সিমগুলোর তালিকা আপনি চাচ্ছেন। এরপর সেবাদানকারী আপনার NID কার্ডের নাম্বার নিবে এবং কিছু সময়ের মধ্যে ওই অপারেটরে রেটিট্রেশন করা আপনরা সকলি সিমের নাস্বার আপনাকে দিবেন।

আরও পড়ুন: প্রিপেইড মিটার এর আদ্যোপান্ত

সিম রেজিস্ট্রেশন দেখার প্রয়োজনীয়তা

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী একটি NID দিয়ে ১৫ টির বেশি সিম কার্ড রেজিট্রেশন করা যাবে না। তাই কোন ব্যক্তির সিম যদি নিজের NID কার্ড দিয়ে ইতোপূর্বে ১৫ টি সিম রেজিট্রেশন করে থাকেন এবং তার নতুন কোন সিম এর প্রয়োজন হয় তাহলে পূর্বের সিমগুলোর মধ্যে থেকে অপ্রয়োজনীয় সিম স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ারপর নতুন সিম নিতে পারবেন। আর সিম স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য অবশ্যই সিমটি কার NID তে রেজিট্রেশন করা আছে তা জানা প্রয়োজন। ঠিক তেমনি ভাবে সিম এর মালিকানা পরিবর্তন, সিম কার্ড রিপ্লেস করতেও সিম রেজিট্রেশন দেয়ার প্রয়োজন হয়।

সিম রেজিস্ট্রেশন পরিবর্তন করার নিয়ম

আমাদের দেশে এমন অনেকে আছে যাদের বয়স ১৮ বা তার কম বা কোন কারনে এখনো NID কার্ড পাই নাই। কিন্তু তার একটি সিম কার্ডের প্রয়োজন। তখর বাবা-মা, বড় ভাই-বোন বা অন্যকোন আত্মীয়ের NID কার্ড ব্যবহার করে সিম রেজিট্রেশন করে নিয়েছেন। বর্তমানে তার নিজের NID আছে। তাই সে তার সিমটির মালিকানা বা রেজিট্রেশন পরিবর্তন করে নিজের নামে করে নিতে চান। এ পদ্ধতিটিও অনেক সহজ। তবে এটি সিম স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ার মতো সহজ নয়। এর জন্য বর্তমান মালিক এবং সিমটির যে নতুন মালিক হবে তাদের দুইজনকেই কাস্টমার সেন্টারে স্বশরীরে উপস্থিত হতে হবে। এরপর সেবা দানকারী প্রতিনিধিকে বললে সে সিমটির মালিকানা পরিবর্তনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন। মালিকানা পরিবর্তনে জন্য উভয়ের NID কার্ড এর নাম্বার, জন্ম তারিখ প্রয়োজন। এগুলো দেয়ার পর তারা তাদের ডিভাইস এর মাধ্যমে উভয়েরই ২ হাতের ২ টি করে মোট ৪ টি আঙ্গুরে ছাপ নিবেন এবং সব কিছু ঠিক থাকলে সাথেসাথেই সিমের মালিকানা পরিবর্তন হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *