ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

ফ্রিল্যান্সিং শব্দটার সাথে ছোট-বড় আমরা প্রায় সবাই এখন কম বেশি পরিচিত। কেননা সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এখন কর্মক্ষেত্রে আইসিটির বহুমুখী প্রভাব ও ব্যবহার লক্ষ করা যাচ্ছে। এমনকি এই প্রভাব ও পরিসর ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। 

কর্মক্ষেত্রে আইসিটির মূলত দুই ধরনের প্রভাব লক্ষ করা যায়। প্রথমত প্রচলিত কর্মক্ষেত্রগুলোতে আইসিটির প্রয়োগের ফলে কর্মদক্ষতার বৃদ্ধি এবং বাজার সম্প্রসারণ, অন্যদিকে আইসিটি নিজেই নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করেছে যার মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) অন্যতম।

ফ্রিল্যান্সিং এর দক্ষ কর্মীরা দেশ ও দেশের বাইরে কোনো প্রতিষ্ঠানে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে পারে। এমনকি এই কাজের একটি বড় অংশ দেশে বসেই সম্পন্ন করা যায়। এভাবে ফ্রিল্যান্সিং করে এখন অনেকেই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। 

এর ফলে ফ্রিল্যান্সিং-এর মাধ্যমে ঘরে বসে উপার্জনের জন্য ফ্রিল্যান্সিং সম্বন্ধে মানুষের ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো ফ্রিল্যান্সিং কি এবং ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শেখা যায় সে সম্বন্ধে অতি প্রয়োজনীয় কিছু গাইডলাইন নিয়ে। 

ফ্রিল্যান্সিং কি 

ফ্রিল্যান্সিং হলো একটি ইংরেজি শব্দ যার বাংলা প্রতিশব্দ হলো ‘মুক্তপেশা’। অর্থাৎ স্বাধীনভাবে কোন পেশায় নিযুক্ত হয়ে আয় করার নামই হলো ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing).

আরেকটু বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে, “ফ্রিল্যান্সিং হলো এমন একটি কর্মক্ষেত্র বা মার্কেটপ্লেস যেখানে কোন ব্যক্তি কিংবা কোন প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে অর্থাৎ কারোর অধীনে না থেকে মুক্তভাবে কাজ করতে পারে ও অর্থ উপার্জন করতে পারে।”

আর যারা ফ্রিল্যান্সিং করে থাকেন তাদের বলা হয় ফ্রিল্যান্সার (Freelancer). ফ্রিল্যান্সিং এর কোন একটি কাজ মূলত অনলাইন এবং অফলাইন যেকোন একটি মাধ্যমেই সম্পন্ন হতে পারে। তবে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে অনলাইনেই এটি সবথেকে বেশি জনপ্রিয়। 

এছাড়া ঘরে বসে ইন্টারনেটের সাহায্যে আয় করা যায় বলে সহজেই আত্নর্ভরশীল হয়ে ওঠার জন্য সাধারণ মানুষের নিকট বিশেষ করে গৃহিণী এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে ফ্রিল্যান্সিং এখন অনেক জনপ্রিয় একটি পেশা। ২০১৯ সালের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৫৭ মিলিয়ন নাগরিক ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করছেন। 

আবার এই ৫৭ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার এর মধ্যে প্রায় ৫৩% ফ্রিল্যান্সার-ই ১৮-২২ বছর বয়সী। এখান থেকে এটি অনেক স্পষ্ট যে, যুবসমাজের মাঝে ফ্রিল্যান্সিং সবথেকে বেশি জনপ্রিয় এবং বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। 

এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বাংলাদেশেও ফ্রিল্যান্স অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস। যেখান থেকে ঘরে বসে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের মাধ্যমে নিজেদের সর্বোপরি দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব। 

এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ্য যে, ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং শব্দ দুটিকে অনেকেই একই অর্থপূর্ণ শব্দ বলে মনে করে থাকেন যেটি সম্পূর্ণ ভুল একটি ধারণা। এমনকি ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং এর ধারণা সম্পূর্ণ একে অন্যের বিপরীত এবং এরা কখনওই একে অন্যের পরিপূরক হতে পারেনা।

কেননা ফ্রিল্যান্সিং মানে হলো মুক্তপেশা। অর্থাৎ বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে একজন স্বাধীন কর্মী হিসেবে কাজ করা। অন্যদিকে আউটসোর্সিং হলো বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস হতে কর্মী হায়ার করা অর্থাৎ কাজে নিযুক্ত করা। 

তাহলে বুঝতেই পারছেন ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং কখনোই এক হতে পারেনা। 

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো 

ফ্রিল্যান্সিং শেখা প্রকৃতপক্ষে খুবই জটিল কিংবা কঠিন কিছু নয়। ইন্টারনেটের কল্যাণে তথ্য আদান-প্রদান ও যোগাযোগের সুব্যবস্থার কারণে এখন আর কোন কিছুই অসম্ভব নয়। বরং বর্তমানে যে কেউ ঘরে বসেই অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারেন। তবে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে এবং এই ফিল্ডে নিজের ক্যারিয়ার ডেভেলপ করতে চাইলে, ইন্টারনেট এবং আইসিটি সম্পর্কে নূন্যতম মৌলিক ধারণাগুলো থাকা আবশ্যক। এছাড়া ইংরেজি ভাষা সম্পর্কে ভালো দক্ষতা থাকতে হবে। কেননা এই ফিল্ডে কমিউনিকেশনের একমাত্র উপায় হলো ইংরেজি ভাষা। 

প্রকৃতপক্ষে ফ্রিল্যান্সিং শেখার সবথেকে সহজ উপায়টি হলো গুগল সার্চ। গুগল সার্চ এর মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত প্রশ্নের উত্তরটি পেয়ে যেতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ আমাদের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনি ফ্রিল্যান্সিং কি এবং এই সম্পর্কে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর সমূহ জানতে চলেছেন। 

গুগলে এরকম অনেক অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ লেখা পোস্ট করা হয়ে থাকে। সুতরাং এ সমস্ত সাইট ভিজিট করার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং সম্বন্ধে প্রয়োজনীয় ধারণা পেতে পারেন। 

এছাড়া ইউটিউবেও ফ্রিল্যান্সিং শেখা সম্পর্কে অনেক ভিডিও পোস্ট করা হয়ে থাকে। এসব ভিডিও দেখার মাধ্যমে আপনি সরাসরি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারেন এবং ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন ধরনের কাজ প্র্যাকটিক্যালি শিখতেও পারেন। 

এছাড়া বর্তমানে অনলাইন এবং অফলাইন উভয় ক্ষেত্রেই ফ্রিল্যান্সিং এর অনেক কোর্স বিক্রি করা হয়ে থাকে। তো আপনার পছন্দ অনুযায়ী কোন একটি কোর্স ক্রয় করে প্র্যাকটিক্যালি ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারেন এবং ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য এটি খুবই ভালো ও ফলপ্রসূ একটি উপায়। 

তবে এক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা অনেক জরুরি একটি বিষয়। কেননা সাম্প্রতিক সময়ে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যেখানে গ্রাহকগণ হাজার হাজার টাকা খরচ করে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার এবং সিডি সেলারদের নিকট থেকে কোর্স কিনছেন। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং আর শিখতে পারছেন না।

তাই যেকোন কোর্স কেনার পূর্বে ঐ ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান সম্বন্ধে খুব ভালোভাবে জেনে নিবেন। অর্থাৎ বিশ্বস্ত এবং সুপরিচিত কোন প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্য যেকোন প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে কোর্স ক্রয় করা থেকে বিরত থাকুন। 

বর্তমানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত কয়েকটি সাইট হলো রবি টেন মিনিট স্কুল, ঘুড়ি লার্নিং, সফ্টটেক ইট ইউডেমি, ফাইবার প্রভৃতি। এছাড়া রকমারি বই ঘর ওয়েবসাইটটিতে ফ্রিল্যান্সিং এর ওপর লেখা অনেক বই রয়েছে যেগুলো থেকে এ সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা পেতে পাড়েন এবং অনেক কিছু শিখতে পারবেন।

তবে হাতে কলমে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য সবথেকে ভালো এবং বিশ্বাসযোগ্য উপায়টি হলো ফ্রিল্যান্সিং এ এক্সপার্ট এবং ইতিমধ্যে এই ফিল্ডে সফলতা অর্জন করেছেন এমন কোনো সুপরিচিত ফ্রিল্যান্সার এর কাছ থেকে সরাসরি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা। 

এডমিন সাপোর্ট 

ফ্রিল্যান্সিং সময়ের সাথে সাথে জনপ্রিয়তার প্রায় শীর্ষে চলে এসেছে। এটি একধরনের মুক্তপেশা হওয়ায় এবং বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের একটি সহজ মাধ্যম হওয়ায় ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে এটি যেমন জনপ্রিয় তেমনি সারা বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা বা কোম্পানির মালিকদের নিকট কর্মী হায়ার করার জন্য এটি খুবই গ্রহণযোগ্য একটি মাধ্যম। 

এর ফলে ফ্রিল্যান্সিং ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিভিন্ন ধরনের কাজ যুক্ত হচ্ছে। তাই এই কাজগুলোকে সহজে ও সঠিকভাবে বোঝা, জানা ও শেখার জন্য এদের ধরন ও কর্মপদ্ধতির উপর ভিত্তি করে কয়েকটি নির্দিষ্ট ফ্রিল্যান্সিং জব ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। যেমন-

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে বর্তমানে এরূপ আরও অনেক জব ক্যাটাগরি রয়েছে। যেখান থেকে ফ্রিল্যান্সারগণ তাদের পছন্দ ও দক্ষতা অনুযায়ী কাজ অনুসন্ধান করে থাকেন।

তবে এই সমস্ত জব ক্যাটাগরির মধ্য থেকে যেটি সাম্প্রতিক সময়ে সবথেকে বেশি জনপ্রিয়, গ্রহণযোগ্য এবং গ্রাহকপ্রিয়তা পেয়েছে সেটি হলো এডমিন সাপোর্ট (Admin Support). Admin Support মূলত Administrative Support কথাটির সংক্ষিপ্ত রূপ যার অর্থ হলো বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অথবা সংস্থা পরিচালনা সংক্রান্ত কাজ সমূহে সহায়তা প্রদান। 

আর যারা এই ধরনের কাজগুলো করে থাকেন তাদের বলা হয় Admin Support Specialists. এডমিন সাপোর্টের কাজ অনলাইন এবং অফলাইন উভয় মাধ্যমেই হতে পারে। তবে এটি অফলাইনের মতো এখন অনলাইনেও সমানভাবে জনপ্রিয় এবং ফ্রিল্যান্সারদের নিকট সবথেকে বেশি গ্রহণযোগ্য। 

এডমিন সাপোর্ট ফ্রিল্যান্সিং জব ক্যাটাগরির মধ্যে রয়েছে আবার অনেকগুলো আলাদা আলাদা কাজের শ্রেণীবিভাগ। যেমন-

  • Lead Generation
  • Data Entry
  • Virtual assistant
  • Administrative assistant
  • Online research
  • Project management
  • Transcription
  • Order processing

তবে এডমিন সাপোর্ট কাজেগুলোর ক্ষেত্রে লিড জেনারেশন এবং ডেটা এন্ট্রি কাজের চাহিদা প্রতিটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসেই অনেক বেশি। এছাড়া এই কাজগুলো শিখতে এবং করতে অপেক্ষাকৃত সহজ কিন্তু লাভজনক। 

তাই এ পর্যায়ে আমরা জেনে নেব লিড জেনারেশন এবং ডেটা এন্ট্রি কাজ সংক্রান্ত মৌলিক কিছু তথ্যাদি ও দিকনির্দেশনা।

লিড জেনারেশন 

ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আয় করার যতগুলো উপায় বর্তমানে সবথেকে বেশি জনপ্রিয়, সেগুলোর মধ্যে লিড জেনারেশন উল্লেখযোগ্য। লিড জেনারেশন শেখা যেমন তুলনামূলক অনেক সহজ, তেমনি এর মাধ্যমে ঘরে বসেই টাকা উপার্জন করে নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা যায়।

এখন প্রশ্ন হতে পারে লিড জেনারেশন কি এবং কিভাবে লিড জেনারেশন এর কাজ করে আয় করবেন। তো প্রথমেই খুব সহজ একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি বিস্তারিত বর্ণনা করার চেষ্টা করব। 

ধরা যাক, আপনার ক্লায়েন্টের একটি বড় ওষুধ কোম্পানী রয়েছে যেখান থেকে তিনি পাইকারি মূল্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ছোট ছোট ওষুধের দোকানে ও হাসপাতালে ওষুধ বিক্রি করেন। 

এখন আপনার ক্লায়েন্ট আপনাকে বলল যে, অমুক এলাকার যতগুলো ওষুধের দোকান রয়েছে সেসব দোকানের নাম, দোকানের মালিকদের নাম, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল এড্রেস এবং ঠিকানা সহ পরিপূর্ণ একটি তালিকা তৈরি করে তাকে দিতে হবে। 

এরপর আপনার ক্লায়েন্টের আদেশ মোতাবেক আপনি ঐ এলাকার শীর্ষ ১০০ জন ফার্মেসি মালিকের লিস্ট ক্লায়েন্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তৈরি করে তাকে পাঠালেন। তো এই যে আপনি ১০০ জন ফার্মাসি মালিকের লিস্ট তৈরি করলেন, এখানে এঁরাই হলো আপনার লিড এবং আপনার এই কাজটি-ই হলো লিড জেনারেশন। আর আপনি হলেন একজন লিড জেনারেটর।

তো এরকমভাবে কোন কোম্পানি, প্রতিষ্ঠান অথবা এককভাবে কোন ব্যক্তির জন্য নির্ধারিত বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে প্রোসপেক্ট লিস্ট তৈরি করার নামই হলো লিড জেনারেশন। 

তথ্যের প্রচার-প্রসার এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ওপর নির্ভশীলতা বেড়ে যাওয়ার কারণে লিড জেনারেশনের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। 

তাই কম্পিউটার অপারেটর এবং টাইপিং এর ওপর প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং চর্চা থাকলেই লিড জেনারেশনের কাজ করে ঘরে ইনকামের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। 

ডাটা এন্ট্রি

ফ্রিল্যান্সিং কাজ সমূহের মধ্যে ডাটা এন্ট্রি বর্তমানে খুবই লাভজনক একটি কাজ। অনলাইন এবং অফলাইন উভয় সেক্টরে একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের এখন প্রচুর চাহিদা। 

বিশেষ করে অনলাইনে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে পার্ট টাইম কিংবা ফুল টাইম জব হিসেবে ডাটা এন্ট্রির হাজার হাজার জব পোস্ট করা হয়ে থাকে। যেখান থেকে একজন ফ্রিল্যান্সার তার পছন্দের কাজটি খুঁজে নিয়ে ঘরে বসেই অনেক টাকা ইনকাম করতে পারেন।

তবে ডাটা এন্ট্রির মাধ্যমে টাকা আয় করার কথা আমরা অনেকেই জেনে থাকলেও, ডাটা এন্ট্রি কি বা ডাটা এন্ট্রির কাজ কিভাবে করতে হয় এ ব্যাপারে আমরা অনেকেই জানিনা। 

তাহলে চলুন এ পর্যায়ে জেনে নেওয়া যাক, ডাটা এন্ট্রি কি এবং এর মাধ্যমে কিভাবে ইনকাম করা যায়। 

সহজভাবে বলতে গেলে, ডাটা এন্ট্রি হলো যেকোন অ্যানালগ ডাটাকে ডিজিটাল ডাটায় রূপান্তরিত করা বা হার্ডকপি থেকে বিভিন্ন ডাটা সফট কপিতে রূপান্তরিত করা। 

অর্থাৎ কম্পিউটার বা ল্যাপটপের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু সফটওয়্যারের সাহায্যে যেকোন ফিজিক্যাল ডাটাকে টাইপিং এর মাধ্যমে কম্পিউটারে স্টোর করা বা এন্টার করাকে ডাটা এন্ট্রি বলা হয়। আর যারা ডাটা এন্ট্রির কাজ করেন তাদেরকে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর বলা হয়। 

এখানে ডাটা বলতে যেকোন ধরনের ফাইল (File), মিডিয়া (Media), তথ্য (Info) অথবা অবজেক্ট (Object) হতে পারে। যেমন- অডিও, ভিডিও, ছবি, টেক্সট, ডকুমেন্ট প্রভৃতি। 

ডাটা এন্ট্রি কাজের ক্ষেত্রে এসমস্ত ডাটা বা তথ্য নির্ধারিত অপারেটর বা কর্মচারী দ্বারা পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংশোধন, যাচাই অথবা স্টোর করানো হয়। 

এক্ষেত্রে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরগণ বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার যেমন- MS-word, MS-excel, MS-office, Wordpad, Note Pad প্রভৃতির সাহায্য নিয়ে থাকেন। 

ডাটা এন্ট্রি কাজের চাহিদা বৃদ্ধির সাথে এই ফিল্ডে প্রতিযোগিতাও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এক্ষেত্রে একজন সফল যোদ্ধা হিসেবে টিকে থাকতে হলে প্রয়োজন দীর্ঘ সময় কাজ করার প্রবল মানসিকতা, ধৈর্য্য, চর্চা এবং দক্ষতা। আর এই গুণগুলো যদি আপনার মধ্যে থেকে থাকে তবে অবশ্যই আপনি একদিন না একদিন একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন। 

তো ডাটা এন্ট্রি কি বা এর কাজ সম্পর্কে আশা করি প্রয়োজনীয় ধারণা ইতিমধ্যে পেয়ে গিয়াছেন। 

শেষ কথা

ফ্রিল্যান্সিং কি এবং ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবেন এ বিষয়ে আমাদের আজকের আলোচনার আমরা প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত বেসিক তথ্যগুলো জানতে চান তাহলে আমদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা আশা করি আপনার জন্য কিছুটা হলেও সুফল বয়ে আনবে। 

শেষ মুহূর্তে আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, মুখস্থ বিদ্যা কখনওই কারো জন্য শতভাগ সফলতা বয়ে আনতে পারেনা। সুতরাং ফ্রিল্যান্সিং এর যেকোন শাখাতেই আপনি যেতে চান না কেন, সেটি আপনাকে প্র্যাকটিক্যালি শিখতে হবে এবং মার্কেটপ্লেসে ঢোকার আগে প্রচুর চর্চা করতে হবে। নতুবা ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে সফলতা অর্জন করা আকাশ কুসুম কল্পনা মাত্র। 

এছাড়া এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নিজের স্কিল খুঁজে বের করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা। বাস্তব এই যে, কোন একজন মানুষের মধ্যে সবধরনের দক্ষতা থাকবে না। তাই নিজের জন্য এমন কোন কাজ খুঁজে নিতে হবে যেটি করতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এবং সে ব্যাপারে আপনার দক্ষতা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *